হাইলাইটস
- মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আগুন আতঙ্ক
- হাসপাতালের কোভিড আইসিইউতে আতঙ্ক
- ভেন্টিলেটরে আগুনের ফুলকি
- তার জেরেই আতঙ্ক
- দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: আগুনের মামুলি ফুলকি ঘরেই আতঙ্কে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লেন প্রশাসনিক কর্তারা। কারণ, জায়গাটা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গ্রিন বিল্ডিঙের কোভিড আইসিইউ। এমনিতেই আপত্কালীন পরিস্থিতিতে আইসিইউয়ে ভর্তি থাকা রোগীদের সরানো ঝক্কির। কারণ, সংকটজনক রোগীদের সরানোর ক্ষেত্রে অনেক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করতে হয়। কোভিড আইসিইউয়ের ক্ষেত্রে তা আরও চাপের। তাই আগুন আতঙ্কে শুক্রবার রাতে রীতমতো ঘাম ছুটল প্রশাসনিক কর্তাদের।
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ সেখানকার একটি ভেন্টিলেটরের ইনপুট সকেটে ফুলকি দেখা যায়। সামান্য ধোঁয়াও বেরোয়। সেই সময়ে ওই ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রোগীও ছিলেন। ফলে রোগী-পরিজনের চেয়ে বেশি আতঙ্কিত ছাড়ায় চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মহলে।
কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, মামুলি শর্ট সার্কিট থেকে এই সমস্যা, যা সঙ্গে সঙ্গেই মিটে যায়। কোনও রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরের প্রয়োজনও পড়েনি। কিন্তু চিকিৎসক মহলের একাংশের বক্তব্য, এখান থেকে অনেক বড় মাপের বিপর্যয় ঘটতে পারত। তা যে ঘটেনি, সেটা নিতান্তই বরাতজোরে।
তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলকি দেখা দিতেই ওই ভেন্টিলেটরের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পূর্ত বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি করেননি। মেশিনটি বাইরে নিয়ে আসা হয়। তার পর পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।
তবে, এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, করোনা ওয়ার্ডে আগুন লাগলে কী করণীয় তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে স্বাস্থ্য দফতর। কেননা, আর পাঁচটা রোগীর মতো করোনা রোগীকে ইচ্ছামতো অন্যত্র স্থানান্তর করা বেশ মুশকিল।
আরও পড়ুন:একদিনে রেকর্ড সংক্রমণ বাংলায়! তবে স্বস্তি দিয়ে কমল মৃত্যুর সংখ্যা
গত বুধবারই মধ্যপ্রদেশের শিবপুরী জেলার এক হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভেন্টিলেটর বিস্ফোরণের জেরে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডে বছর ৫৫-র এক রোগীর মৃত্য়ু হয়। মৃতের স্বজনদের দাবি, তাঁদের রোগী ভেন্টিলেটর সাপোর্টে ছিলেন। সেই ভেন্টিলেটরে দুর্ঘটনাবশত বিস্ফোরণ ঘটলে আইসিইউতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরে রোগী মারা যান।
আরও পড়ুন: কলকাতায় কি পুরভোট করার পরিস্থিতি আছে, সুপ্রিম কোর্টে সোমবার জানাবে কমিশন
যদিও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ খণ্ডন করে জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ ঠিক নয়। রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন শিবপুরীর জেলা কালেক্টর।
মধ্যপ্রদেশের গুনার বাসিন্দা মৃত ওই রোগীর ছেলে মহম্মদ তাহির এদিন জানান, তাঁর বাবা মহম্মদ ইসলাম (৫৫) শিবপুরী জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁকে আইসিইউতে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল। ছেলের অভিযোগ, বাবাকে যে ভেন্টিলটর সাপোর্ট রাখা হয়েছিল, বুধবার তাতে বিস্ফোরণ ঘটে। তা থেকে অগ্নিকণা ছিটকে বাবার বেডের গদিতে আগুন ধরে যায়।
তাহিরের অভিযোগ, অগ্নিকাণ্ডের কারণে আইসিইউ ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল। তাঁর বাবাকে ওই অবস্থায় আইসিইউ থেকে যখন বের করা হয়, তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর দাবি, অক্সিজেনের ঘাটতিতেই এই বিপত্তি ঘটেছে।
চিফ মেডিক্যাল হেলথ অফিসার (CMHO) ডাক্তার অর্জুন লাল শর্মা জেলা হাসপাতালের আইসিইউতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করে নেন। তবে, তিনি দাবি করেন, আগুন তত্ক্ষণাত্ নিভিয়ে ফেলা হয়েছিল। আগুন আইসিইউতে ছড়িয়ে পড়েনি। অগ্নিকাণ্ডের কারণে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেন।
বুধবার এই ঘটনার জেরে উত্তেজনা তৈরি হয় হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সোচ্চার হন রোগীর আত্মীয়রা। যদিও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গাফিলতির অভিযোগ মানেননি। অগ্নিকাণ্ডকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে, কর্তৃপক্ষ জানায়, রোগী সংকটজনক অবস্থায় ভর্তি ছিলেন। অসুস্থতার কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আইসিইউতে সামান্য আগুন লাগলেও মৃত রোগীর পরিবার যে অভিযোগ করছেন, তা ঠিক নয়। আগুন সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিভিয়ে ফেলি।
দু-পক্ষের এই চাপানউতোরের মধ্যেই রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে জেলা হাসপাতালে হাজির হন শিবপুরীর কালেক্টর অক্ষয় কুমার সিং। রোগীর মৃত্যু সম্পর্ক খোঁজখবর নেন। সরকারি সূত্রে খবর, ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, শিবপুরীর সহকারী কালেক্টর কাজল জওলার নেতৃত্বে তদন্ত হবে। সাত দিনের মধ্যে তাঁকে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট এখানে ক্লিক করুন।
Source: https://eisamay.indiatimes.com/west-bengal-news/kolkata-news/west-bengal-fire-panic-at-kolkata-medical-college-hospital/articleshow/78455046.cms