পরিবারের অভিযোগ, বারবার হেল্পলাইন ও চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসা করলেও কেউই মৃত্যুর খবর জানায় নি
#কলকাতা: উত্তর ২৪ পরগনা সোদপুর সুখচরের বাসিন্দা ইতি টিকাদার, ৩৬ বছর বয়েস। গত এক বছর ধরে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন ইতিদেবী। ভেলোর থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করায় তার পরিবার। মাঝে কিছুদিন সুস্থ থাকলেও জুলাই মাসে আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েন ইতিদেবী। শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার, নোবেল করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ হয়। গত ২১ জুলাই তাকে ভর্তি করানো হয় কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গ্রীন বিল্ডিংয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন ইতিদেবী। পরিবারের অভিযোগ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করলে বেশিরভাগ সময়ই তাদেরকে কিছুই জানানো হতো না, বহু সময় ফোন এনগেজ পাওয়া যায়।
বুধবার সকালে ইতিদেবীর স্বামী, বাবা, দুই দিদি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। তা চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তাদের বলা হয় চিকিৎসক রাউন্ডে আছেন। এরপর তারা আবারও হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করেন তাদের বলা হয় রোগীর অবস্থা ভাল নয়। বেলা দেড়টা নাগাদ গ্রীন বিল্ডিংস থেকে প্যাকেটে ভরে একটি মৃতদেহ যখন বার করা হচ্ছিল, তখন ইতিদেবীর বাবা নারায়ন মজুমদারের সন্দেহ হয়। তিনি দৌড়ে গিয়ে ট্রলিতে শোয়ানো প্যাকেট মোড়া মৃতদেহের বুকে লাগানো স্টিকার বা ট্যাগে লেখা দেখতে পান নিজের মেয়ের নাম ইতি টিকাদার। যে কর্মীরা মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছিলেন তাদেরকে তিনি বারবার জিজ্ঞেস করেন এটি তারই মেয়ে কিনা তারা দুর্ব্যবহার করে সরিয়ে দেন বৃদ্ধ নারায়ণ মজুমদারকে। এরপর কাঁদতে কাঁদতে ছুটে যান বৃদ্ধ মর্গের দিকে, সেখানেও তাকে দুর্ব্যবহার করা হয়। এর বেশ খানিকক্ষণ বাদে ওয়ার্ড মাস্টার অফিস থেকে পরিবারকে জানানো হয় ইতি টিকাদারের মৃত্যু হয়েছে আজ ভোর রাতে।
উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি পুরসভার সোদপুর শহীদ কলোনির বাসিন্দা ৭০ বছরের বৃদ্ধ নারায়ন মজুমদারের একটাই প্রশ্ন তার মেয়ের তো কোন অপরাধ ছিল না তাহলে কেন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তার মেয়ের মৃত্যুর খবর তাদেরকে একবার জানানোর প্রয়োজন বোধ করলো না! মৃতের অসহায় দুই দিদি মমতা দাস এবং মৌসুমী দাস তাদেরও একই আক্ষেপ,’চিকিৎসক, কর্মী এদের কারুর কি একটুও মানবিকতাবোধ নেই,আমাদের আদরের ইতিদেবী। ছেড়ে চলে গেল কেউ একবার জানালও না! বাবা যদি দৌড়ে গিয়ে সন্দেহের বশে মৃতদেহ না দেখে থাকতো,তাহলে তো আমরা জানতেই পারতাম না।’ মৃত ইতি টিকাদারের একাদশ শ্রেণীতে পড়া একমাত্র সন্তান, তাকে কি জবাব দেবে,সে নিয়েই অস্থির অসহায় পরিবার।
কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি সম্পূর্ণ একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। হেলপ্লাইন বিভাগে যে কর্মীরা কাজ করেন তাদের অবশ্যই মৃতের পরিবারকে এই বিষয়টি জানানো উচিত ছিল। আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
AVIJIT CHANDA
পুরো খবর পড়ুন
Source: https://bengali.news18.com/news/kolkata/family-members-accuse-calcutta-medical-college-of-not-informing-them-about-patients-death-ac-493214.html